সিনেমাটির মূল চরিত্রে রয়েছেন একজন বিধবা মা, যিনি তার মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত। কিম হাই-জা এই মায়ের চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। উনার চোখের ভাষা, শরীরের ভঙ্গি – সবকিছু মিলে একটা পূর্ণাঙ্গ মায়ের চরিত্র ফুটে উঠেছে। যখন তার ছেলেকে একটি খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়, তখন তিনি নিজেই তদন্ত শুরু করেন। এই অংশটুকু দেখে আমার নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। মা কতদূর যেতে পারে তার সন্তানের জন্য – এটা খুব সুন্দরভাবে দেখিয়েছে পরিচালক।
ছবির গল্প যতই এগোয়, ততই জটিল হতে থাকে। মায়ের ভালোবাসা আর অন্ধত্বের সীমারেখা কোথায়, সেটা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়েছি। কোরিয়ান সিনেমার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এতে হাস্যরসও আছে, কিন্তু সেটা খুবই স্বাভাবিক ভাবে এসেছে। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে শেষের দিকের মোড়গুলো। যখন সত্য বেরিয়ে আসে, তখন দর্শক হিসেবে আমি হতবাক।
ছবির প্রতিটি দৃশ্য খুব যত্ন করে তোলা হয়েছে। গ্রাম্য কোরিয়ার প্রাকৃতিক দৃশ্য থেকে শুরু করে শহরের রাতের আলো – সবকিছু যেন গল্পের সাথে একাত্ম হয়ে গেছে। মিউজিকও খুব সুন্দর ব্যবহার করা হয়েছে, বিশেষ করে যেসব মুহূর্তে মা’র মানসিক অবস্থা ফুটিয়ে তোলার প্রয়োজন ছিল।
আমার মনে হয় এই সিনেমাটি শুধু একটি থ্রিলার নয়, এটি মাতৃত্বের জটিল দিকগুলো নিয়ে একটি গভীর অনুসন্ধান। আমি যাদের সাথে এই সিনেমা নিয়ে আলোচনা করেছি, তারা সবাই একমত যে এটি একটি মাস্টারপিস। যদিও শেষটা একটু বিষণ্ণ, কিন্তু এটাই বাস্তব জীবনের সত্য। দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা যে কত উন্নত মানের হতে পারে, ‘মাদার’ তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।