Love in the Time of Cholera (2007) মুভি রিভিউ

রেটিং: ★★★★☆ (৪/৫)

“লাভ ইন দ্য টাইম অফ কলেরা” নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের সেই অসামান্য লেখনীর জাদু—আর সিনেমাটি যেন সেই জাদুকরী কথাগুলোকেই জীবন্ত করে তুলেছে পর্দায়। পরিচালক মাইক নিউয়েল যেন একটা টাইম মেশিন বানিয়ে দিয়েছেন; ১৯শতকের কলম্বিয়ার রোমান্টিক যুগে ঢুকে পড়তে পারবেন আপনি, নদীর পাড়ে ভেসে থাকা নৌকাগুলোর মাঝে, পুরনো শহরের সরু গলির আঁকাবাঁকা পথে। মনে হবে যেন রঙিন ক্যানভাসে আঁকা কোনো স্বপ্ন!

গল্পটা তো জানাই—ফ্লোরেন্টিনো আরিজার সেই অর্ধশতাব্দীর প্রেমের লড়াই, যেখানে সময়, সমাজ, আর কলেরার মহামারী সবাই যেন তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সিনেমায় এই গল্পটা এতটা জীবন্ত হয়ে উঠেছে যে চোখের সামনে সবকিছু ভেসে ওঠে। জাভিয়ের বারদেমের ফ্লোরেন্টিনো তো এক কথায় হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া! ওই যে চোখের দৃষ্টিতে লুকিয়ে থাকা বেদনা, আর মুখে একগুঁয়ে আশার ঝিলিক—এমন অভিনয় দেখলে কে বলবে এটা শুধু একটা চরিত্র? পুরো সিনেমাজুড়ে ফারমিনা ডাজার ভূমিকায় জিওভানা মেজোজিওর্নোও সমান তালে মুগ্ধ করেন। বিশেষ করে যখন যুবতী ফারমিনা ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যান, সিনেমাটোগ্রাফির সেই ট্রানজিশন দেখলে মনে হয়, “এটা কিভাবে সম্ভব?”

শুধু প্রেমের গল্প নয়, এখানে সময়ের সাথে পাল্লা দেওয়া, সমাজের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করা, আর নিজের ভেতরের যুদ্ধ—সবই যেন একসাথে জড়িয়ে আছে। মার্কেজের বইয়ের মতোই কিছু যাদুবাস্তবতার ছোঁয়া হয়তো মিস করবেন কেউ কেউ, আর ২ ঘন্টার বেশি রানটাইম একটু টেনশন লাগতেই পারে। কিন্তু পর্দায় যখন ফ্লোরেন্টিনো আর ফারমিনার চোখাচোখি হয়—এসব দৃশ্যে হারিয়ে যাবেন আপনি। আর সাউন্ডট্র্যাক? মাথার ভেতরে গেঁথে যাওয়ার মতো!

একটা জিনিস ঠিক—সিনেমাটা দেখার পর কয়েকদিন মাথায় ঘুরবে শেষের সেই প্রশ্ন: “প্রেম কি আসলেই সবকিছু ছাপিয়ে অমর হতে পারে?” রোমান্টিক ড্রামা প্রেমীদের জন্য এটা অবশ্যই দেখার মতো। আর যারা মার্কেজের ফ্যান, তাদের তো কথাই নেই—বইয়ের পাশাপাশি এই ভিজুয়াল জার্নিটাও একবার ট্রাই করতেই হবে। এক কথায় বললে, প্রতিটি ফ্রেমে যেন কবিতার লাইন লুকিয়ে আছে—আর সেটা আপনার হৃদয়ে নাড়া দেবেই!

Spread the love

Leave a Comment